নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্রজেন দাস ও মোশাররফ হোসেনের পর আবারও ইংলিশ চ্যানেলের উত্তাল জলরাশিতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরতে প্রস্তুত হচ্ছেন দুই সাহসী বাংলাদেশি সাঁতারু। তাদের লক্ষ্য ইতিহাসকে ছুঁয়ে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করা।
এই দুই সাঁতারু হলেন নাজমুল হক হিমেল ও
মাহফুজুর রহমান সাগর। দেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন নিয়েই তারা নামছেন এই দুরূহ অভিযানে। চলতি বছরের মাসে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মাঝের ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথ পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
তাদের অনুপ্রেরণা ব্রজেন দাস, যিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই চ্যানেল পাড়ি দেন। এরপর মোশাররফ হোসেন ১৯৭৯ সালে এই চ্যালেঞ্জে সফল হন। তাদের পথ ধরে নতুন প্রজন্মের এই সাঁতারুরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরেই।
তাদের একজন, নাজমুল হক হিমেল বলেন, “ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া কেবল একজন সাঁতারুর স্বপ্ন নয়, বরং এটা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্যও এক সম্মানের বিষয়।” অপরজন,মাহফুজুর রহমান সাগর জানান, “আমরা চাই বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে নতুনভাবে তুলে ধরতে।”
এই দুই তরুণের স্বপ্ন সফল হলে বাংলাদেশ আবারও গর্বিত হবে ইংলিশ চ্যানেলে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে। সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা, যেন সফলভাবে এই ঐতিহাসিক যাত্রা সম্পন্ন করতে পারেন।
আগামী ৭ জুলাই ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন নাজমুল ও মাহফিজুর। ১৭ থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে যেকোনো দিন চ্যানেলে নামতে পারেন তাঁরা। এই দুজনের সঙ্গে কলকাতা থেকে আরও দুজন সাঁতারুও অংশ নেবেন।
হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদকে জিতেছেন নাজমুল। যার মধ্যে আছে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি সোনা, ১৫টি রুপা। এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতারে জেতেন পাঁচ সোনা ও চার রুপা।
বিকেএসপির সাবেক ছাত্র নাজমুল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ২০১২ সালে চীনে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হন।
আরেক সাঁতারু মাহফিজুর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন। ২০১৬ সালে রিও ডি জেনিরোর পুলে নেমেছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০টির মতো সোনা জিতেছেন। ২০১০ এসএ দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ, ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে সাতটি ব্রোঞ্জ, ২০১৯ নেপাল এসএ গেমসে একটি ব্রোঞ্জ জেতেন। ২০১৬ থাই ওপেনে সোনা জেতেন মাহফিজুর।