নিজস্ব প্রতিবেদক
কিশোরগঞ্জে হাওরে নিকলী,ইটনা, মিঠাইমন, অষ্টগ্রাম বোরো ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষকরা। চলতি মাস ও বৈশাখ মাসে বোরো ধান ঘরে তোলার ধুম পড়েছে কৃষকের ঘরে ঘরে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে যখন নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে ঠিক তখনই বোরো ধান কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। ধান ঘরে তুলতে পেরে খুশি চাষিরাও। ধানের ভালো ফলন পেয়ে অনেকটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠার স্বপ্ন বুনেছেন এখানকার কৃষক।
প্রথম ধাপে হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড টিয়া, স্তকর ,SL8H সহ-বিধান,৮৮,৮৯,৯২,৯৬,১০০,১০১,১০২,১০৪,১০৮, জাতের ধান বাম্পার ফলন হয়েছে।
এসকল ধান একর প্রতি ৭০ থেকে ৮০ মণ ফলন হয়।বর্তমানে দেশীয় শ্রমিকরা প্রতি একর জমির ধান কাটছে ১০ হাজার টাকা।অন্যদিকে হারবেষ্টার মেশিনে একর প্রতি ৭ হাজার টাকায় ধান কাটছে। মেশিনের কাটার সুবিধা জমির ধান জমিতেই কেটে বস্তায় পুড়ে ফেলা যায়। পরে এসকল ধান বাড়ির আঙ্গিনায় খলায় নিয়ে এসে গোলায় তুলে ফেলা হয়।দেশীয় শ্রমিকরা ধান কেটে জমি থেকে ট্রলিতে তুলে দেয় পরে খলায় এনে মাড়াই মেশিন দিয়ে ধান ছুড়তে হয়।এতে কৃষকের ভোগান্তিও কম নয়।এবছর হারবেষ্টার মেশিন খুব কম দেখা গেছে হাওরে মেশিন বেশি থাকলে দেশীয় শ্রমিকরা কম টাকাই জমি কাটতে বাধ্য হত।হাওরের কৃষকরা জানান,ধান কাটার পর জমি থেকেই কাঁচা আধা পাঁকা ধান ৮শ থেকে ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধানের দর কম থাকায় কৃষকরা হতাশা,এতে করে সেচ স্কীমের চার্জ, স্যার, কীটনাশক দিয়ে লোকশান গুণার সম্ভাবনা রয়েছে।
দেখা গেছে, মাঠে মাঠে বোরো ধান কাটা হচ্ছে। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও সমান তালে কাজ করছেন। কেউ ধান কাটছেন আবার কেউ ধান বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউবা জমিতে ও বাড়ির উঠোনে ধান মাড়াই করছেন।
চলতি মাসেই নিকলী উপজেলায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। অপরদিকে মজুরি বেশি থাকায় কৃষি শ্রমিকরা ও সন্তষ্ট। তবে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে কৃষি শ্রমিক কম পাওয়া যাচ্ছে। দিন হাজিরায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দিয়েও মিলছে না শ্রমিক।
নিকলী উপজেলা কৃষি অফিসার সাখাওয়াত হোসেন জানান, নিকলী উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের ১৪ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ করা হয় । চলতি বছরে ফলন ভালোই হয় এবং খরায় কৃষকদের করণীয় সম্পর্কে লিফলেট ছাপিয়ে বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৮০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।